এবার ভারতের পালা

এবার ভারতের পালা

খেলার চমক জুন ২০১৫

মোহাম্মদ হাসান শরীফ # বাংলাদেশ কখন সত্যিকারের বাঘে পরিণত হলো? যেদিন ক্রিকেটবিশ্বের বলদর্পী দেশটি ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশের ন্যায্য জয় ছিনিয়ে নিলো। এবারের বিশ্বকাপে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের হুঙ্কার ভালোভাবেই শোনা গিয়েছিল। তবে পাকিস্তান তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কাছে তারা হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ওয়ানডে সিরিজে, হেরেছে একমাত্র টি-২০ ম্যাচে। এর রেশ শেষ হতে না হতেই আসছে সেই বলদর্পী দেশ তথা ভারত।
জুনে বাংলাদেশে একটি টেস্ট এবং তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে আসছে ভারত। ১০ জুন ফতুল্লায় শুরু হবে একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি। আর প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ হবে ১৮ জুন। পরের ম্যাচ দু’টি হবে ২১ ও ২৪ জুন। ওয়ানডে ক্রিকেটের তিনটি ম্যাচই হবে মিরপুরে।
বাংলাদেশের জন্য এই সিরিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেবল বিশ্বকাপে যে অন্যায় ও অবিচার হয়েছিল, তার জবাব দেয়ার জন্যই নয়, নিজেদের অবস্থান বিশ্ববাসীকে জানানোর সুযোগও এই সিরিজ।
তবে এখানে কিছু আশঙ্কাও আছে। গতবার ভারত যখন তাদের দ্বিতীয় সারির দলটি পাঠিয়েছিল, তখন আমাদের এখানে অতি আত্মবিশ্বাস দেখা গিয়েছিল। সিরিজটিকে গুরুত্ব দিয়ে নেয়া হয়নি। সবাই ভেবেছিল, এই দলকে অনায়াসেই হারানো যাবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছিল ভিন্ন ফল। ওই ধরনের পরিস্থিতি যাতে না হয়, সেদিকে এখন থেকেই নজর রাখতে হবে।
অবশ্য বাংলাদেশ দল ইতোমধ্যেই ভারত সিরিজ নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। দলের সবার মধ্যে আত্মবিশ্বাস দেখা যাচ্ছে পুরোপুরি। ভারতকে হারানোর ব্যাপারে সবাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এখন মাঠে সেটা কাজে লাগানোর ব্যাপার।s1
ভারতের পর আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল। ওই সিরিজটিও আরেকটি মর্যাদার লড়াই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সমীহ আদায় করার জন্য নিয়মিত জয় দরকার।
সার্বিকভাবে বলা যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। এই ফর্ম অব্যাহত থাকলে যেকোনো দলই পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য। পাকিস্তানও ভাবতে পারেনি তারা ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হবে। তাদের দলে অবশ্য বেশ কয়েকটি ইনজুরি ছিল। কিন্তু তবুও মনে করেছিল বাংলাদেশে হারবে না। কিন্তু তারা একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিনটি ম্যাচেই হেরেছে। তারপর একমাত্র টি-২০ ম্যাচ হলো। তাতে অধিনায়ক ছিলেন শহিদ আফ্রিদি। তিনিও কল্পনা করেননি তার দল হারতে পারে। তিনি ভেবেছিলেন, একাই হারিয়ে দেবেন। কিন্তু মাঠে দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতি। পরাজিত হলেন আফ্রিদি। বাংলাদেশ বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়ল।
তারপর খুলনায় প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ যেভাবে খেলেছে, তা ক্রিকেটবিশ্বে নজিরবিহীন। প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত খেলা সত্ত্বেও পাকিস্তান বেশ ভালো অবস্থান নেয়। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম পর্যন্ত এই ম্যাচে কিছু করার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই পরিস্থিতিতেও বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়ে অসাধারণভাবে ম্যাচটি ড্র করেন তামিমরা। অবশ্য ঢাকায় দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে বাংলাদেশ হেরে যায়। ম্যাচটি শেষ হয়ে যায় চার দিনেই। পুরো সিরিজে এটাই ছিল বাংলাদেশের একমাত্র পরাজয়। টসে জিতে পাকিস্তানের হাতে ব্যাট তুলে দেয়ার সাথে সাথেই যেন ম্যাচও তুলে দেয়া হয়েছিল। ওই একটা ম্যাচেই টাইগারদের প্রাপ্তি আরো বড় হলো না।
আর তার রেশ ধরেই ভারতের বিপক্ষে সিরিজ শুরু হবে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখনো কিছুটা পিছিয়ে আছে। সেই হিসেবে টেস্ট দিয়ে শুরু না হয়ে প্রথমে ওয়ানডে সিরিজটা হলেই মনে হয় অনেক ভালো হতো।
তবে যা-ই হোক, বাংলাদেশের মানুষ এখন আরেকটি জয়ের প্রতীক্ষা করছে। ভারতের বিপক্ষে সিরিজটি অনেক হিসাব মেলানোর সিরিজ। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরার সিরিজ। এই সিরিজে হারা চলবে না। আর বাংলাদেশ হারতে পারে- এমনটা ভাবার দরকারই কী? বাংলাদেশ জিতবে, আমাদের জাতীয় পতাকা আরো সমুন্নত হবে, এই নিশ্চিত বিশ্বাসেই স্বপ্ন দেখতে চায় বাংলাদেশের মানুষ।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ