ঈদের গান

ঈদের গান

কুরআনের আলো জুন ২০১৭

‘ও মন, রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’- এ গান ছাড়া যেন আমাদের ঈদই হয় না। শাওয়ালের চাঁদ ওঠার সাথে সাথেই হৃদয়ে বেজে ওঠে এ গানের মধুঝরা সুর। খুশিতে দুলতে থাকে সবাই। আর এ খুশির দোলা থেকে বাদ পড়েনি মাসুমও। সালাতুল মাগরিব আদায় করে এসেই কমপিউটারে চালু করে দিল প্রিয় এই গান। আব্বু ঘরে পা রাখতেই দেখলেন- মাসুম, তার ছোটবোন নাবিলা ও সাবিহা সবাই মিলে গান শুনছে। আব্বুও চেয়ার টেনে বসে পড়লেন তাদের সাথে। খুব মনোযোগের সাথে শুনলেন। এরপর বললেন, এ গান থেকে তোমরা কে কী শিখেছো? প্রশ্নটা অদ্ভুত মনে হলো সবার কাছে। মাসুম বলল, না- সেভাবে তো ভাবিনি কখনো! এটা ঈদের গান- খুশির গান- ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে কিছু বলার চেষ্টা করল নাবিলা। আর সাবিহা বলল, আচ্ছা! গানটা আবার শুনে নিই?
আব্বু মুখে হাসির রেখা টেনে বললেন, দেখেছো তো! আমরা কেবল আনন্দের জন্যই গান শুনি। অথচ এর মধ্যেও যে অনেক কিছু শেখার আছে, জানার আছেÑ তা কিন্তু আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভাবি না। এমন হওয়া উচিত নয়। কারণ একজন মুমিনের প্রতিটি কাজই হবে অর্থবহ। হোক সেটা কবিতা লেখা, গান গাওয়া কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া। যেমন, ঈদের কথাই ধরো। ঈদ মানে শুধু নিজে নিজে আনন্দে বিভোর হয়ে থাকা নয়। এ আনন্দ ছড়িয়ে দিতে হবে সবখানে। সবার মাঝে। কেউ বাদ পড়বে না। ধনী-গরিব, ছোট-বড় এমনকি রাস্তার টোকাই ছেলেটিও। ফুলকুড়ানি মেয়েটিও। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর এ দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে ধনবানদের ওপর। আর সে কথাই কিন্তু এ গানে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন কবি। কবি বলেছেন- যারা, জীবনভরে রাখছে রোজা, নিত্য উপবাসী / সেই, গরীব ইয়াতিম মিসকীনে দে যা কিছু মুফীদ...
তিন ভাই-বোন যেন ভাবনার কূল পেলো এবার। নাবিলা বলল, তাহলে আমরা আরেকটি ঈদের গান শুনি। আব্বু বললেন, অবশ্যই। এবার বেজে উঠল- আজও ঈদের চাঁদ যে হাসে! / তবু আমার হৃদয় কেন / চাঁদের মতো হাসে না- / তাহলে কি ঈদ এখন আর / ঈদের মতো আসে না॥...
গান শেষ হতেই সাবিহা বলে উঠল, এ গানেও কিন্তু দুঃখী মানুষের প্রতি ভালোবাসার আর্তনাদ ফুটে উঠেছে। হ্যাঁ! ঠিকই- বলল মাসুম। নাবিলা আব্বুকে টিপ্পনী কেটে বলল, আমরা কিন্তু মনোযোগ দিয়েই শুনেছি এবারের গান। আব্বু হাসলেন। বললেন, তাহলে বলো তো, তোমাদের করণীয় কী? কেন, আশপাশের গরিব-দুঃখীদের খাবার দেবো। পোশাক দেবো। ভালোবাসা দেবো। আর তাদের মুখে ফোটাবো শাওয়ালের চাঁদের মতোই সুন্দর একটি হাসি- বলল মাসুম। আর দু’বোন সমস্বরে সায় দিলো তার কথায়।
আব্বু বললেন, ও হ্যাঁ! মনে রেখো, এটা কিন্তু তাদের প্রতি করুণা নয়। বরং এটা তাদের ন্যায্য পাওনা। আল্লাহ বলেছেন, “আর তাদের ধন-সম্পদে রয়েছে অভাবী ও বঞ্চিত মানুষদের অধিকার।” (সূরা যারিয়াত : ১৯)
বিলাল হোসাইন নূরী
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ