ঈদ আনন্দ এবং আমরা   -ড. রফিক রইচ

ঈদ আনন্দ এবং আমরা -ড. রফিক রইচ

ফিচার জুলাই ২০১৬

রঙিন  প্রজাপতির মত ছটফটে সোনামণিরা দেখতে দেখতে আবার ঈদ এসে কড়া নাড়লো আমাদের আঙিনায়। বিশ্বমুসলিম  আঙিনায়।  চারিদিকে আনন্দের থই থই রব, সাজ সাজ রব। বড়দের চাইতে তোমাদের আনন্দটাই বেশি। আবার তোমাদের আনন্দিত হতে দেখে বড়রাও কম আনন্দিত  নয়। আনন্দটা আসলে সবাইকে নিয়ে সবার। কিন্তু একটা কথা কি জান, ঈদের এই আনন্দ উপভোগ করার বিষয়টি যেমন হওয়া উচিত তেমনটি যেন হচ্ছে না। আবার যাদের এ আনন্দ উপভোগ করা উচিত তারা যেন ভালোভাবে উপভোগ করতে পারছে না। আবার যাদের এ ঈদের আনন্দ উপভোগ করা একেবারেই উচিত নয় তারা যেন আরো বেশি মাত্রায় ঈদের আনন্দ উপভোগ করছে। সব মিলিয়ে ঈদের নির্ভেজাল আনন্দ উপভোগ করার সাথে বর্তমান সময়ে অসঙ্গতি চোখে পড়ছে, অমিল চোখে পড়ছে। যা আমাকে ভাবিয়ে তুললেও হতাশ  করছে না। আমি আশাবাদী মানুষ। আশা করি ঈদের আনন্দ উপভোগ করার এসব অসঙ্গতি তথা অমিলগুলো আকাশের কালো মেঘের মত সরে যাবে। কারণ মেঘের পেছনেই তোমাদের মত সূর্যরা রয়েছে। তোমাদের বিচ্ছুরিত আলোয় পরিচ্ছন্ন হবে ঈদের আনন্দ। আর এ আনন্দ উপভোগ করে একদিকে আমরা পুলকিত হব অন্যদিকে আমাদের অস্থায়ী জীবনের চেয়ে চিরস্থায়ী জীবনের আবাসস্থল হবে বড় আরামের। বড় আয়েশের। যে আরাম আয়েশের কোন তুলনা পরিমাপ করার মত নয়। সে জন্যই আজকের ঈদের লেখাটিতে একটু বিচিত্রতা থাকবে। যে লেখাটি তোমাদের মন ও মগজকে আলোকিত করবে এবং এর বিচ্ছুরণে সমাজ আলোকিত হবার ফলে ঈদের প্রকৃত ও যথার্থ আনন্দটুক ইসলামী বিধিবিধানমত উপভোগ করে পার্থিব ও অপার্থিব জীবনে সবাই সফল হতে পারবো।
আমার আনন্দের সৈনিকেরা একটি ছড়া শোন-
“চাঁদ দেখ চাঁদ ঐ আকাশে
নৌকা হয়ে ভাসছে
চাঁদের নৌকায় ঈদের রাজা
খুশি নিয়ে আাসছে।
ঈদের রাজা সবার মাঝে
খুশির যে খই ছিটাবেন,
খুশির ক্ষুধা যাদের  আছে
আচ্ছা মতন মিটাবেন।
যদি হঠাৎ এমন কেহ
খুশির খইয়ে বাদ পড়ে
তোমার ভাগের খুশির সে খই
দিও তারে ভাগ করে।”
নিজে কোন কিছু নেয়ার চাইতে অন্য কাউকে কোন কিছু দেয়ার আনন্দটাই বেশি। তোমরা হয়ত অনেকেই অন্যকে অনেক কিছু দাও। আবার অনেকেই দাও না। যারা অন্যকে দাও  বা দান কর বা উপহার দাও তারা আমার উপরের কথার সাথে হয়ত একমত হবে। আর যারা দাও না তারা এবার ঈদে অন্যকে একটা রঙিন জামা কিনে দিও বিশেষ করে যারা গরিব। কেনার সামর্থ্য যাদের নেই। তাদের দিও দেখবে কেমন আনন্দ পাচ্ছে।
আবার তোমরা যারা শহরে থাকো তারা হয়ত ভালো বুঝবে না তবে যারা গ্রামে থাক তারা আমার নিচের কথাগুলো ভালো বুুঝবে।
গ্রামে গঞ্জে ঈদ এলে আগের রেষারেষি বা থেমে থাকা গোলমালগুলো মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। অথবা নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে নাই কথা নিয়ে গোলমাল শুরু করে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে মেরে বা আঘাত করে রক্তাক্ত করে আনন্দ উপভোগ করে। এতে শিশু ও কিশোরসহ সবাই অংশগ্রহণ করে। যা ঈদের আনন্দকে ম্লান করে দেয়। এতে এক পক্ষের কষ্ট দেখে আরেক পক্ষ আনন্দিত হয়, যা ঈদের আনন্দের পর্যায়ে পড়ে না। তোমরা এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকবে, সচেতন হবে।
পরিপূর্ণভাবে যারা ইসলামের বিধিনিষেধ পালন করে তাদের জন্যই ঈদের আনন্দ অনাবিল সুখের, শান্তির ও স্বস্তির। পরিশেষে তোমাদের জন্য একটি ছড়া লিখে শেষ করছি
রোজার মাসে রোজাসহ
নামাজ কালাম পড়,
সারা বছর রোজার আমল
ভাল করে কর।
নইলে পরে ঈদের সুখে
সুখ হবে না কারো,
বিজয়ী হও তোমরা সবাই
চাও কেহ কি হারো?
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ