আশুরার কথা

আশুরার কথা

হাদীসের আলো বিলাল হোসাইন নূরী জুলাই ২০২৩

শেষরাতে, প্রতিদিনের মতো আজও ঘুম ভেঙে গেছে ফারিহার। মা-তো পাশেই থাকার কথা। কিন্তু নেই। এদিকে টুংটাং আওয়াজ আসছে রান্নাঘর থেকে। ফারিহা চুপচাপ সেখানে হাজির। মা খাবারের আয়োজন করছেন। মা বলে ডাক দিতেই চমকে উঠলেন তিনি। বললেন, ওহ! তুমি?

কী করছ মা?

সাহরির আয়োজন করছি। কাল রোজা রাখব।

সাহরি? রোজা? রমজান তো পার হয়ে গেছে অনেক আগেই! এখন আবার কীসের রোজা? মা বললেন, রমজান ছাড়াও কত রোজা আছে! নফল রোজা। কাল রাখব আশুরার রোজা।

আশুরা কী মা? এর জন্য রোজা রাখতে হয় কেন? ফারিহার মনে জোনাকির মতো মিটিমিটি করছে একের পর এক প্রশ্ন।

মা বললেন- সে এক বিরাট ইতিহাস!

মূসা (আ) নামে একজন নবী ছিলেন। তার জাতিকে বলা হতো বনি ইসরাঈল। সে সময় মিসরের শাসক ছিল ফেরাউন। নিজেকে প্রভু দাবি করেছিল সে! মূসা ও তার অনুসারীদের ওপর তার জুলুমের শেষ ছিল না। একদিন আল্লাহর আদেশ এলো। মূসা (আ) বনি ইসরাঈলকে নিয়ে রওয়ানা হলেন সিরিয়ার পথে। খবর পেয়ে ফেরাউনও ধাওয়া করল তাদের। সাথে তার বিশাল সেনাবাহিনী। চলতে চলতে মূসা ও তাঁর অনুসারীদের সামনে পড়ল বিশাল সমুদ্র। হাতের লাঠি দিয়ে সমুদ্রে আঘাত করলেন তিনি। তৈরি হলো পথ। আর সে পথ দিয়েই তারা পার হয়ে গেলেন খুব সহজেই। 

এদিকে ফেরাউনও সে পথ দিয়েই রওয়ানা হলো। মাঝামাঝি আসতেই পথ উধাও! এরপর ডুবে মরল সকলেই!

এ দিনের স্মরণে মূসা (আ) রোজা রেখেছিলেন। শুকরিয়া আদায়ের রোজা। মহানবী (সা) মদিনায় এসে ইহুদিদের এ দিন রোজা রাখতে দেখে বললেন- ‘তোমাদের চেয়ে আমিই মূসার অধিক কাছাকাছি।’ এরপর তিনি এ দিনে রোজা রাখেন এবং রোজা রাখার আদেশ দেন। (বুখারি)। এ কারণে আমরাও রোজা রাখি। স্মরণ করি, মূসা (আ)-এর ঐতিহাসিক বিজয়ের কথা। ও হ্যাঁ! সে দিনটি ছিল মহররমের দশ তারিখ। একেই বলা হয় আশুরা।

কথা বলতে বলতে খাবার তৈরির কাজও শেষ। ফারিহা বলল- আমিও রোজা রাখব তোমার সাথে। মা হেসে বললেন- ঠিক আছে।

বিলাল হোসাইন নূরী

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ