Home কুরআন ও হাদিসের আলো হাদীসের আলো ভাগ্যলিপি

ভাগ্যলিপি

কখন সকাল হবে- সন্ধ্যা নামতে না নামতেই শুরু হলো লাবীবার অপেক্ষার প্রহর! কাল কি তাহলে ঈদ? না! ঈদ নয়, নয় অন্য কোনো উৎসবও। কাল তার স্কুলে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতা আছে। সেখানে সে অংশগ্রহণ করবে! আর বিতর্ক তার ভীষণ পছন্দের একটি বিষয়। বিতর্কের কোনো আয়োজন এলেই লাবীবার যেন ঘুম উধাও হয়ে যায়!
বড়ো আপু আগামীকালের প্রস্তুতির খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। সুন্দর সুন্দর পরামর্শও দিচ্ছেন তাকে। বললেন, চলো- তোমাকে আজ অন্যরকম এক বিতর্কের গল্প শোনাই। আদম ও মূসা (আ)-এর বিতর্ক!
লাবীবা কৌতূহলী হয়ে উঠল। বলল, এ কী করে সম্ভব? দু’জন তো একই সময়ে পৃথিবীতে আসেননি!
আরে, এ বিতর্ক হয়েছে রুহের জগতে!
মূসা (আ) আদমকে বললেন- আপনি তো সেই আদম! যাকে আল্লাহ তাঁর নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনার মধ্যে রুহ ফুঁকে দিয়েছেন। ফেরেশতা দ্বারা আপনাকে সিজদাহ করিয়েছেন। তাঁর জান্নাতে জায়গা দিয়েছিলেন। অতঃপর আপনি আপনার ভুলের কারণে মানবজাতিকে জমিনে নামিয়ে দিয়েছেন!
আদম (আ) বললেন- তুমি তো সেই মূসা! যাকে আল্লাহ তার নবুওয়াত ও কথার জন্য মনোনীত করেছেন। তোমাকে তাওরাত দান করেছেন, যাতে রয়েছে সকল বিষয়ের বর্ণনা। তিনি তোমাকে গোপন কথা দ্বারাও নৈকট্য দান করেছেন। আল্লাহ আমার সৃষ্টির কত বছর পূর্বে তাওরাত লিখে রেখেছিলেন তুমি কি জানো? মূসা (আ) বললেন, চল্লিশ বছর পূর্বে। তখন আদম (আ) বললেন- তুমি কি তাওরাতে এ কথা পাওনি- “আদম তাঁর প্রতিপালকের নাফরমানি করেছে এবং পথভ্রষ্ট হয়েছে?” মূসা (আ) বললেন- হ্যাঁ, পেয়েছি! আদম (আ) বললেন- তাহলে, তুমি আমাকে এমন কাজের জন্য তিরস্কার করছ কেন, যা আমার সৃষ্টিরও চল্লিশ বছর পূর্বে আল্লাহ লিখে রেখেছিলেন?
রাসূল (সা) বললেন- মূসা (আ)-কে পরাজিত করে আদম (আ) জয়ী হলেন! (মুসলিম : মিশকাত)।
লাবীবা বলল- চমৎকার তো!
দারুণ যুক্তি, অসাধারণ বিতর্ক! আচ্ছা, আপু! আমাদের ভাগ্য কি তাহলে আল্লাহ আগেই লিখে রেখেছেন?
আপু বললেন- হ্যাঁ! আর প্রতিটি ঈমানদারকেই ভাগ্য তথা তাকদিরের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। আল্লাহর ইচ্ছাতেই সব হয়। তবে আমাদেরও চেষ্টা থাকতে হবে ভালো কিছু পাওয়ার জন্য। গান শোনোনি?- “আমার ভাগ্যলিপির পাতায় পাতায় তোমার খুশির ফুল!…”

বিলাল হোসাইন নূরী

SHARE

Leave a Reply