পৃথিবীর সবকিছুই আজ নতুন নতুন লাগছে। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইয়াসিরের কাছে মনে হচ্ছে, এই মুহূর্তে জগতের সবচেয়ে সুখী মানুষ সে! আজ ইয়াসিরের কাছে আছে এমন এক খবর, যা তার মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাবে। বুকের ভেতর বইয়ে দেবে অনাবিল এক সুখের নহর। আহা! এরচেয়ে ভালো অনুভূতি আর কী হতে পারে?
ইয়াসির ভাবছে, খবরটি শোনার পর মা কি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরবে না? বাবার চোখের কোণে কি ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু জমবে? আনন্দের অশ্রু?
হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে ইয়াসির পা রাখল বাড়িতে। মাকে দেখেই বলল- আসসালামু আলাইকুম! মা! আমি বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম হয়েছি, প্রথম!
প্রথম? আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ!
বাবাও ছুটে এলেন আওয়াজ শুনে। বললেন, মাশাআল্লাহ!
আর তার ছোট্ট বোনটি, কিছু বুঝতে না পারলেও সবার সাথে প্রাণ খুলে হাসছে! তার মুখে নিষ্পাপ খুশির ঢেউ! পুরো ঘরটাই যেন হয়ে উঠল সুখের সরোবর! আর ইয়াসির ঠিক এ দৃশ্যটাই দেখতে চেয়েছিল।
নতুন বছর, নতুন আলো। সবখানে নতুনের উৎসব। ইয়াসিরের হাতেও নতুন বই! আজ নতুন পাতার মতোই যেন সবুজ হয়ে উঠেছে তার জীবনের পাতা।
মাগরিবের সালাত আদায় করে ইয়াসির পড়তে বসেছে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণে তার মনটা কেমন ঝরঝরে হয়ে উঠছে। সবগুলো বই খুলে খুলে দেখছে সে। পাতায় পাতায় রঙিন অনুভূতি! বাবা এসে বসলেন তার পাশে। এলেন মা-ও! শীতল কণ্ঠে বাবা বললেন, ইয়াসির! তোমার এ সফলতায় আমরা ভীষণ খুশি। তবে তোমার কাছে আরও চাওয়া আছে আমাদের! আমরা চাই, তুমি পৌঁছে যাও প্রকৃত সফলতার শীর্ষে!
ইয়াসিরের চোখে-মুখে কৌতূহল।
বাবা বললেন, এ আয়াত দু’টি মনোযোগ দিয়ে শোনো- “সফল তো হবে সে, যে নিজেকে পবিত্র রাখে। এবং তার রবের নাম স্মরণ করে ও সালাত কায়েম করে।” (সূরা আল-আ’লা : ১৪-১৫)।
এ পবিত্রতা সব ধরনের পাপ থেকে। শিরক থেকে। আমরা চাই- তুমি ভালো কাজের আলো ছড়াবে জীবনভর। কিয়ামতের দিন সবার সামনে পরিচিত হবে একজন সফল মানুষ হিসেবে। আর উত্তরাধিকারী হবে জান্নাতের!
ইয়াসির যেন সফলতার নতুন পরিচয় পেল। বুঝতে পারল, শুধু ভালো ফলাফলই সফলতা নয়। হতে হবে ভালো মানুষও!