ছোট সোনামণিরা তোমরা কি জানো আমাদের নবীজির নাম কী? নিশ্চয়ই বলবে হযরত মুহাম্মদ (সা)। ছোটবেলায় তাকে সবাই আল-আমিন বলে ডাকতো। আল আমিন অর্থ বিশ্বাসী। কারণ তিনি ছিলেন বিশ্বাসের প্রতীক বা রাজা। তৎকালীন আইয়ামে জাহেলিয়াতের সময় কাফেররাও বিশ্বাস করতো। কাফেররা তাঁর কাছে সবসময় টাকা পয়সা জমা রাখতো। এমনকি যে ভাঁজে ভাঁজ করে রাখতেন ঠিক সেভাবেই তাদের টাকা পয়সা মাল ফেরত দিতেন। এই কারণে কাফেররা তাকে সবসময় আল-আমিন বলে ডাকতো। যার এতো গুণ তার একটা গোলামের সাথে তোমাদের পরিচয় করিয়ে দেই। তিনি সবসময় নিজের কাজ নিজে করতেন। তারপরেও একটা কাজের লোক দরকার আছে। কাজের লোকটি তথা গোলামটি হলেন আর কেউ নয় হযরত আনাস (রা)। তার বয়স তখন দশ বছর। তখন রাসূল (সা) তাকে কাজের ছেলে হিসেবে বাসায় নিয়ে আসেন। সবসময় মনোযোগের সাথে কাজ করতো। রাসূল (সা) তাকে খুব স্নেহ করতেন। এবার শোনো একদিন কী কাণ্ড ঘটে গেল! রাসূল (সা) হযরত আনাস (রা)কে বললেন, হে আনাস তুমি এই কাজটি করে ফেলবে, এ কথা বলে রাসূল (সা) চলে গেলেন অন্য কোথাও। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে দেখেন কাজটি আগের জায়গায় পড়ে আছে। আনাস (রা) কাজটি করেননি। তিনি আনাস (রা)কে ডাক না দিয়ে তার কাজটি করে ফেললেন। এবং আনাসের খোঁজে বের হলেন। কিছুক্ষণ যাওয়ার পর আনাসকে খেলারত অবস্থায় পেলেন। কিছুই বললেন না। তিনি আনাসের খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে রইলেন। এবার আনাস (রা) এর খেলা শেষ। একেতো ছোট বাচ্চা। অন্য বাচ্চাদের সাথে খেলতে গেলেন। তাই রাসূল (সা) কিছুই বলেননি। আনাস (রা) খেলা শেষে মাঠ থেকে বের হলেন। এমনকি রাসূল (সা)কে দেখে আনাস (রা) থমকে দাঁড়ালেন। চোখে-মুখে ভীতির ছাপ। হযরত (সা) আনাসের হাত ধরে মুচকি হেসে বললেন আনাস, আমি তোমাকে যে কাজের আদেশ দিয়ে গিয়েছিলাম তুমি তা করোনি। কাজটি আমি নিজেই করেছি। আনাস (রা) লজ্জিত হয়ে গেলেন। রাসূল (সা) তাকে ধমক দেননি। গালমন্দ করেননি। কাজের ছেলে বলে ছোট করে দেখেননি।
আনাস (রা) বুঝে গেলেন, মুচকি হেসে রাসূল (সা) যে শাসনটি আমাকে করে গেছেন তা আমি জীবনে ভুলিনি। হযরত আনাস (রা) রাসূল (সা)-এর কাছে দীর্ঘ দশ বছর যাবৎ ছিলেন। দশ বছরে আর কোনদিন কোন কাজের কথা বলতে হয়নি। সময় মতো কাজটি চুকিয়ে ফেলেছেন। পরবর্তীতে এই আনাসই বিখ্যাত সাহাবী হযরত আনাস (রা) হয়েছিলেন।