আজান। কী মধুর সুর! এ সুর তাফহীমের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। প্রতিদিন। প্রতিবার। খুব ছোটবেলা যখন রেডিওতে আজান শুনতো, তখন ভাবত বড় হয়ে সে মুয়াজ্জিন হবে। তার সবচেয়ে ভালো লাগে, যখন একই সাথে চারদিক থেকে আজান ভেসে আসে। সুরে সুরে মুখরিত হয়ে ওঠে আকাশ বাতাস! মুখরিত হয় লোকালয়!
একদিন দাদা তাকে আজানের গল্প শোনালেন। তিনি বললেন, কিভাবে মানুষকে সালাতের দিকে ডাকা হবে এ নিয়ে মহানবী (সা) খুবই চিন্তিত ছিলেন। চিন্তিত ছিলেন সাহাবীরাও। কেউ বললেন, আজানের সময় পতাকা ওড়ানোর কথা। কেউ বললেন, ঘণ্টা বাজানোর কথা। কেউ বললেন, শিঙা বাজানোর কথা। আবার কেউ আগুন জ্বালানোর কথাও বললেন। কিন্তু কোনোটাই তাঁর পছন্দ হলো না।
এরপর সাহাবী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ (রা) এসে বললেন, “আমি ছিলাম আধোঘুমে। তখন এক আগমনকারী আমাকে আজান দেখালো।” মহানবী (সা) বললেন, “হে বিলাল! দাঁড়াও। দেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ কী বলে। তুমি তার অনুসরণ করো।” বিলাল (রা) তখন আজান দিলেন।
একই স্বপ্ন দেখেছিলেন উমর (রা)। তিনি তা গোপন রেখেছিলেন বিশ দিন। মহানবী (সা) তাকে বললেন, তুমি আমাকে জানালে না কেন? তিনি বললেন, আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আগেই বলে ফেলেছে। তাই আমি লজ্জায় বলিনি। (আবু দাউদ)
দাদার কাছে এমন সুন্দর গল্প শুনে তাফহীম তো অনেক খুশি! এ-তো খুশির কথাই! দাদা বললেন, আরেকটা খুশির কথা শোনো। মহানবী (সা) বলেছেন, “কিয়ামতের দিন মুয়াজ্জিনের মাথা থাকবে সবার উপরে।” (বুখারী) তাফহীম ভাবল, না! মুয়াজ্জিন তাকে হতেই হবে। এখন থেকেই সে মাঝে মধ্যে আজান দিবে। শুনে দাদাও খুশি! তাফহীমও খুশি!
দাদা বললেন, তোমাকে হতে হবে জাতির মুয়াজ্জিন। সবসময় মানুষকে ডাকবে সত্যের পথে। সুন্দরের পথে!
বিলাল হোসাইন নূরী