Home মুখোমুখি আগে মনটা তৈরি করো তারপর পড়ার জন্য তৈরি হও -অধ্যাপক এমাজউদ্দীন...

আগে মনটা তৈরি করো তারপর পড়ার জন্য তৈরি হও -অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ

বন্ধুরা, ‘মুখোমুখি’তে এবার তোমাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ

প্রশ্ন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি হিসেবে কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান? এর জন্য তরুণদের করণীয় কী?
ইনামুল হক তুষার
বাঁশখালী, চট্টগ্রাম
উত্তর : আমি অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও মুক্তমনের মানুষ। সৎ, দেশপ্রেমিক এবং সহজ-সরল মানুষের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

প্রশ্ন : আমি অনেক বড় হতে চাই, বড় হতে হলে কী করতে হবে?
নওশেদ আলী
পঞ্চগড় নুরুন আলা নুর কামিল মাদরাসা
উত্তর : অনেক বড় হতে হলে দুটো বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে। মানে ভালো করে লেখাপড়া শিখে তোমার যে জ্ঞানচর্চার প্রতি একটা আগ্রহ আছে এ আগ্রহটা বাস্তবায়িত করা অর্থাৎ পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে হবে প্রথমত। দ্বিতীয়ত, শুধু ভালো ছাত্র হওয়াটাই যথেষ্ট নয়, সাথে সাথে ভালো মানুষও হতে হবে, নীতিনৈতিকতার দিক থেকে চমৎকার একটা ব্যক্তিতে পরিণত হতে হবে।

প্রশ্ন : আমি দশম শ্রেণীতে মানবিক বিভাগে লেখাপড়া করি। আমার লক্ষ্য হলো একজন ভালো ব্যারিস্টার হওয়া। এ জন্য আমাকে কী করতে হবে?
মো: নুর উদ্দিন
বজরা কঞ্চিবাড়ী মজিদিয়া দাখিল মাদরাসা, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা
সাইফুদ্দীন আহমেদ
মিরপুর মফিদ-ই-আম স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আমীনবাজার, সাভার, ঢাকা
উত্তর : এ প্রশ্নের জবাব খুব সহজ। দশম শ্রেণীতে ভালো রেজাল্ট করো, ভালো রেজাল্ট করে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষাটা ভালো করে দেবে, ইন্টারমিডিয়েটে বিভিন্ন বিষয়ে ভালো করে পড়ে পরীক্ষা দিয়ে ভালো রেজাল্ট করতে হবে। তারপর এখানে এলএলবি পড়তে হবে। পারলে এলএলএম এই ডিগ্রিটাও নিতে হবে। এলএলবি এবং এলএলএম এ দুটো ডিগ্রি যদি দেশ থেকে নাও তাহলে লন্ডনে গিয়ে ব্যারিস্টার হতে মাত্র ৯-১০ মাস লাগবে।

প্রশ্ন : স্যার আপনি কখন পাঠ্যবই পড়তেন, কখনÑ পত্রপত্রিকা পড়তেন, অন্যান্য বই পড়তেন এবং খেলাধুলা করতেন?
মো: শাহাদাত হোসাইন
জালশুকা, পাতাড়ি, সাপাহার, নওগাঁ
উত্তর : হ্যাঁ, আমি খেলাধুলা করতাম। ফুটবল, ক্রিকেট এগুলো আমি খেলতাম। আর পাঠ্যপুস্তক দু’বার পড়লেই সেটা আমার মুখস্থ হয়ে যেতো। কারণ, অতীতে আমার স্মৃতিশক্তি খুব প্রখর ছিল। এখন অবশ্য নেই, অনেকটা কমে গেছে। আমার বাবা শিক্ষক ছিলেন তারই প্রণোদনায় সন্ধ্যার পর পড়তে বসতাম। আমি গ্রামের ছেলে। সে সময় ইলেকট্রিসিটি ছিল না। হারিকেন জ্বালিয়ে পড়তে হতো। দুই আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই পাঠ্যবইয়ের সব পড়া শেষ করতাম। তা ছাড়া পাঠ্যবইয়ের বাইরে কিছু সুসাহিত্য আছে যেমন নজরুলের কাব্য-কবিতা, রবীন্দ্রনাথের লেখা, শরৎচন্দ্রের লেখা, এগুলো দেখতাম আর ইংরেজি ছোট ছোট বইগুলো তখন থেকেই পড়তাম সুতরাং পড়া-শোনাটাই আমার একমাত্র সাধনা ছিলো। সারা জীবনের একটা লক্ষ্য ছিল যে, আমি প্রচুর পড়র এবং প্রচুর জানবার চেষ্টা করব।

প্রশ্ন : অনেকেরই ধারণা, মানুষ বানরের পরিবর্তিত রূপ। স্যার, মানুষ কি আসলেই বানর থেকে সৃষ্টি বা বিবর্তিত হয়ে আজকের সভ্য মানুষে পরিণত হয়েছে?
তরিকুল ইসলাম শান্ত
নিঝুমদ্বীপ, হাতিয়া, নোয়াখালী
উত্তর : না এটা ঠিক না, আমরা আদম-হাওয়ার সৃষ্টি। বানর থেকে আমরা আসিনি। অর্থাৎ এই যে পৃথিবীর ইতিহাস সম্পর্কে মানুষ জানে। দশ হাজার বছরের ইতিহাসও মানুষের জানা। এর মধ্যে কী কোন বানর মানুষ হয়েছে? হয়নি। সুতরাং এসব চিন্তা করবা না।

প্রশ্ন : আপনার সফলতার পেছনে কার অবদান সবচেয়ে বেশি?
আদনান মাহমুদ তামিম
পনাইরচক উচ্চবিদ্যালয়, গোলাপগঞ্জ, সিলেট
উত্তর : আমার সফলতার পেছনে আমার বাবা-মা উভয়েরই অবদান উল্লেখযোগ্য। আর উচ্চ শিক্ষার জন্য আমার স্ত্রীর অবদান বা ত্যাগ এটাও একটা মস্ত বড় ব্যাপার। আমি যখন পিএইচডি করতে বিদেশ যাই। পিএইচডি করতে প্রায় ৪ বছর লাগে। এই ৪ বছরে আমার স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েকে ঢাকাতে রেখেই আমি কানাডা কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করি সুতরাং আমার স্ত্রীর অবদানও প্রচুর।

প্রশ্ন : আমি একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হতে চাই। কিভাবে এবং কতটুকু পড়ালেখা করতে হবে দয়া করে বলবেন কী?
মো: রেদোয়ানুল ইসলাম
রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর
উত্তর : একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হতে হলে, প্রাথমিক পর্যায়ের যে বইগুলো যেমন সিভিকসের যে বইগুলো আছে এগুলো পড়তে হবে। এসএসসি বা এইচএসসি লেভেলের যে বইগুলো আছে, এগুলো খুব ভালো করে পড়তে হবে। বিশ্বের বহু রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আছেন যেমনÑ গ্রিসের প্লেটো, অ্যারিস্টটল, সক্রেটিস তাদের বই পড়তে হবে। বিলেতের হবস, লক; ফ্রান্সের রুশো তাদের বইগুলো পড়তে হবে অর্থাৎ যে টেক্সট বই আছে, তা ভালমতো পড়তে হবে। নোটবই পড়লে চলবে না। আর আন্তর্জাতিক সম্পর্কে জানার জন্য প্রচুর নামকরা বই আছে, এগুলো পড়তে হবে অর্থাৎ পড়ার শেষ নেই।

প্রশ্ন : বর্তমানে বাংলাদেশের গণতন্ত্র বা রাজনীতি কেমন? গণতান্ত্রিক না আত্মতান্ত্রিক না প্রজাতান্ত্রিক না অন্যতান্ত্রিক?
রেজওয়ান আহম্মেদ
ঝিনাই, ধুনট, বগুড়া
উত্তর : বাংলাদেশের যখন জন্ম হয়, জন্মের পরবর্তী পর্যায়ে গণতন্ত্রের আশীর্বাদ মাথায় নিয়েই অগ্রসর হয়েছিল, যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু মাত্র আড়াই বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে গণতন্ত্র নির্বাসিত হয়। তোমরা আরও জানবে যে, যিনি বাংলাদেশের একজন প্রতিষ্ঠাতা, স্থপতি, সেই বীর জাতীয় নেতা, শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় ব্যবস্থা করার ফলে গণতন্ত্র বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়। একদলীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। তার পর থেকে চেষ্টা করা হয়েছিলো। বাংলাদেশ আবার নতুন করে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার জন্য জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়ার ভূমিকা আছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে কি না তুমি নিজেই এর উত্তর খোঁজো। গণতন্ত্র থাকার অর্থ হলো জনগণের শাসন, সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ, জনপ্রতিনিধিগণ শাসন করবেন। আর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত থাকা মানে ব্যক্তির অধিকার কোনভাবে লঙ্ঘিত হবে না। সংবাদপত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকবে। এই পরিস্থিতি যদি বিদ্যমান থাকে তাহলে তাকে গণতন্ত্র বলা যায়।

প্রশ্ন : কিভাবে জ্ঞানী হওয়া যায়?
খালেদ সাইফুল্লাহ
চাম্বল উচ্চবিদ্যালয়, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম
উত্তর : জ্ঞানী হওয়া বা জ্ঞান অর্জন করা এটা কিছুটা আল্লাহতায়ালার দান। যারা জ্ঞানী মানুষ তারা শুধু প্রচুর লেখাপড়া শিখেই জ্ঞানী হননি। এটা আল্লাহতা’লা প্রদত্ত কিছু ব্যাপার। আর নিজের প্রচুর প্রচেষ্টা, প্রচুর উদ্যম, প্রচুর পড়াশোনার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা, দেশ ভ্রমণ বা বিভিন্ন দেশের সিস্টেম সম্পর্কে জানা, কিভাবে পৃথিবী চলছে। কোন দেশের কী অবস্থা। আমাদের দেশের অবস্থাই বা কী? তুলনামূলকভাবে জানা, সব মিলিয়ে ব্যাপারটা দুই সূত্রে গাঁথা। এক, আল্লাহপ্রদত্ত আশীর্বাদ দুই, নিজের বুদ্ধিবৃত্তিকে তীক্ষè করা। আর এভাবেই জ্ঞানী হওয়া যায়।

প্রশ্ন : স্যার, উত্তম রাজনীতিবিদের কী কী গুণ থাকা প্রয়োজন?
মো: জাকির হোসেন
পাঁচবিবি, জয়পুরহাট
উত্তর : উত্তম রাজনীতিক যারা তাদের কয়েকটা গুণ থাকা দরকার। এ রাজনীতি যেহেতু জনগণের কল্যাণ সম্পর্কিত বিষয় এ জন্য তাকে জনকল্যাণকামী হতে হবে। সৎ হতে হবে এবং উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যা জনগণের কাজে লাগে। জনগণের উপকারী যেমন শহরের রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, সুপেয় বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ অথবা বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করা, দেশের একটা সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা তৈরি করা এবং জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেককেই সমান সুযোগ-সুবিধা দান করা। এই গুণগুলো যে ব্যক্তির মধ্যে থাকবে, তিনিই হলেন সুস্থ এবং সঠিক রাজনীতিক। এবং হিংসা বা প্রতিহিংসা তার কিছু থাকবে না। এটা হিংসা প্রতিহিংসার কোনো ব্যাপার না। একটি গণতান্ত্রিক দেশের ভিত্তিই হলো জনগণ। এই জনগণের জামিনদার বা আমানতদার হলেন রাজনীতিকরা। সুতরাং এই জনগণের ক্ষমতা তিনি যদি জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করতে পারেন, তিনিই হলেন উত্তম রাজনীতিক।

প্রশ্ন : আমার পড়ার টেবিলে বসতে একটুও মন চায় না, কী করলে আমি পড়ালেখায় মন বসাতে পারবো?
মো: আলি আহাদ
গাইবান্ধা সদর
উত্তর : পড়ার টেবিলে মন বসতে অনেকেরই চায় না। প্রথম প্রথম তা-ই হয়। কিন্তু তুমি যদি পড়তে ভালোবাস, যদি ছবির বইগুলো পড়ে আনন্দিত হও, তুমি সেটা আগে দেখ, গান শুনতে যদি ভালো লাগে তাহলে ভালো গায়কের গান শোন, ভালো রবীন্দ্রনাথ সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, এগুলো আগে শোন, শোনার পর মনটা শান্ত হলে তারপর তুমি পড়তে বসো। অর্থাৎ পড়াশোনা তো একটা কঠিন কাজ। এই কঠিন কাজ করার আগে মনটা তৈরি করে নিতে হবে। ছবি আঁকার ইচ্ছা থাকলে ছবি আঁকা বা ছবির বই দেখো, এই যে বললাম আগে মনটা তৈরি করো। তারপর পড়ার জন্য তৈরি হও।

প্রশ্ন : আমি জীবনে সফলতার সুউচ্চ শিখরে আরোহণ করে জাতির সেবা করে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে চাই। তাই আমি আপনার কাছে জানতে চাই, সফলতা অর্জনের পেছনে কোন বিষয়গুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
মো: আবদুর রব
খলিলুর রহমান কামিল মাদরাসা, রামগতি, লক্ষ্মীপুর
উত্তর : একটা মানুষের সফলতা নির্ভর করে তার কার্যক্রমের ওপর। যিনি কঠিন পরিশ্রমী ব্যক্তি, যিনি প্রচুর জ্ঞানী এবং তিনিই ন্যায়নিষ্ঠ একজন মানুষ হতে পারেন। তিনি অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকেন, সত্য বলেন, সত্য বলতে গিয়ে অনেক বিপদেও পড়তে হয় তাকে কিন্তু এই সত্য পথচ্যুত হন না তিনি। সত্যপথ ছাড়েন না তিনি এবং সবার কাছে তার একটা গ্রহণযোগ্যতা থাকবে। তার কাজকর্ম রীতি-নীতি, আচার আচরণ এসবগুলো এমন হওয়া চাই যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এ রকম হলে একজন সফল মানুষ হওয়া যায়।

প্রশ্ন : স্যার, পড়ালেখার পাশাপাশি আর কী কী প্রয়োজন?
আতিক বিন হাবিব
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
উত্তর : পড়ালেখার পাশাপাশি প্রয়োজন হলো মনটাকে উন্নত করা, এর সাথে দেহটাকেও যাতে সুস্থ রাখা যায়। এ জন্য বাড়িতে এক্সারসাইজ বা মাঠে খেলাধুলা যেমন ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি দরকার। মর্র্নিং ওয়াক করে সকালে সুস্থ হাওয়াতে একটু হাঁটাহাঁটি করা এবং তোমার হবি যদি থাকে যেমন গান শোনা, ছবি আঁকা, ভ্রমণ করা- এগুলো থাকা ভালো।

প্রশ্ন : আমি একজন লেখক হতে চাই। আমি জানতে খুবই আগ্রহী যে, একজন লেখকের সবচেয়ে বড় গুণ কী?
আলী হোসেন সাদ্দাম
দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, দিনাজপুর
উত্তর : একজন লেখক হতে হলে নিজেকে আগে তৈরি করতে হবে। এই তৈরি করার জন্য প্রচুর পরিমাণে বইপুস্তক পড়তে হবে। সাথে সাথে তুমি বাংলাতে যদি লিখতে চাও তাহলে চমৎকারভাবে বাঙলাটা আগে জানতে হবে। ইংরেজিতে লিখতে হলে ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে। প্রচুর বই পড়বে, ভাষাটাকে সুন্দর করবে সাথে সাথে তোমার অভিজ্ঞতার ঝুলিটাও যেন বড় হয়।

প্রশ্ন : সফলতার প্রধান এবং প্রথম শর্ত কী?
তানবীরুল ইসলাম
খলিফা পাড়া, রংপুর এবং
আবু সাঈদ
চান্দিনা, কুমিল্লা
উত্তর : সফলতার প্রধান এবং প্রথম শর্ত হলো, যিনি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং প্রিয়মানুষ আর তার নিজের লক্ষ্য তিনি অর্জন করেছেন সুন্দরভাবে যে লক্ষ্য নিয়ে তিনি বেড়ে উঠেছেন ঐ লক্ষ্যটা অর্জিত হয়েছে তার আগে। এবং এই লক্ষ্য কল্যাণকর কাজে ব্যবহার হচ্ছে, এগুলো দিয়েই সফলতার বিচার করা যায়।

প্রশ্ন : আপনি কোনো খেলাধুলা করতেন এবং করলে কতটুকু সময়?
সালাহউদ্দিন আহমেদ
বারফা বার বাজার, ঝিনাইদহ
উত্তর : আমি আগেই বলেছি ফুটবলের প্রতি আমার দুর্বলতা ছিল, ক্রিকেটের প্রতিও দুর্বলতা ছিল। কিন্তু প্রচুর খেলাধুলার সময় আমি পাইনি। মানে, খানিকটা বা টুকটাক খেলাধুলা করেছি।

প্রশ্ন : বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা কি পূর্ণ নৈতিকতাসমৃদ্ধ মানুষ তৈরিতে সক্ষম?
সাদিয়া
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
উত্তর : পরিপূর্ণ মানুষ তৈরিতে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা সক্ষম নয়। শিক্ষার মধ্যে দুটো জিনিস দরকার। একটা হলো জীবনটাকে সুন্দর করার জন্য অথবা কৃতিত্বপূর্ণ অর্জনের জন্য সাধারণ শিক্ষার প্রয়োজন আছে। এটা যেমন দরকার সাথে সাথে মনটাকে নির্মল করার জন্য, মনটাকে পরিশীলিত করা জন্য, নৈতিক শিক্ষার দরকার আছে। এই দুটো ¯্রােতের সংমিশ্রণ যেখানটাই ঘটবে সেটি হলো আসল শিক্ষা। অর্থাৎ ভালো ছাত্র আর ভালো মানুষ হওয়া দরকার।

প্রশ্ন : আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হতে চাইÑ এর জন্য আমাকে কী করতে হবে?
ইমরান হোসেন
চান্দাবহ ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা, গাজীপুর
উত্তর : আগে তোমাকে ভালো ছাত্র হতে হবে। প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে যাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হয়ে উঠতে পারো। এবং পরবর্তীতে প্রচুর গবেষণা, অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করতে হবে। তারপর এটা হওয়া কঠিন কিছু না।

প্রশ্ন : আপনার প্রিয় মানুষ কে এবং কেন?
ইসমাইল
রায়পুরা, নরসিংদী
উত্তর : আমার প্রিয় মানুষ আমার মরহুম পিতা। সব থেকে তাকে শ্রদ্ধা করতাম। তিনি অন্য রকম মানুষ ছিলেন। তিনি যেমন ভালবাসতেন তেমন শাসনও করতেন। কোনো অনুষ্ঠানে গেলে ছেলেমেয়েদেরকে তিনি বই উপহার দিতেন। তখন বই উপহার দেয়ার রেওয়াজ ছিল। নতুন বই বের হলে সেগুলো আমাকে কিনে দিতেন। এই কারণে তাকে আমি শীর্ষস্থানে রেখেছি।

প্রশ্ন : বর্তমানে প্রায় সকল পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে, এই প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ কী?
আবদুল্লাহ আল মামুন
কল্যাণপুর হাইস্কুল, মানিকগঞ্জ
উত্তর : এটা খুব খারাপ কথা, অযোগ্যতার জন্য এই ব্যাপারগুলো ঘটছে। যোগ্য ব্যক্তি যদি দায়িত্বে থাকে তাহলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় না। আমরাও তো পরীক্ষা দিয়েছি, কই তখনতো প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। ফাঁস যাতে না হয় তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অগ্রসর হতে হবে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে ওই পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্ট যাই হোক তা কাজে আসবে না। তোমাকে সাহায্য করবে না। সবাই যে এই ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত তা নয়, এই জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণের কথা চিন্তা করে অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষাব্যবস্থা যারা পরিচালনা করছেন তাদেরকে আরও সাবধান হতে হবে। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণের দায়িত্ব তাদেরই।

প্রশ্ন : আমি শিক্ষক হতে চাই, শিক্ষক হতে হলে কী কী যোগ্যতা থাকা দরকার?
তাসনিয়া
ইমাম গাজ্জালী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পাবনা
উত্তর : শিক্ষক হতে হলে ভালো ছাত্র হতে হবে। ভালো পাঠক হতে হবে। ভালো লেখক হতে হবে। তারপর যেকোনো স্ট্যান্ডার্ড প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা অর্জন করতে হবে। শিক্ষক হতে হলে আগে ভালো রেজাল্ট করতে হবে।

প্রশ্ন : ছোটবেলায় আপনি কী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন, আপনার স্বপ্ন কতটুকু পূরণ হয়েছে।
সৈকত
সিলেট এমসি কলেজ
উত্তর : আমার বাবা ছিলেন শিক্ষক, আমি শিক্ষক, আমার মেয়ে শিক্ষক, আমার নাতনীও শিক্ষকতা করতে যাচ্ছে। শিক্ষকতা আমাদের একটা বড় প্রফেশন হিসেবে ছিল। মানে মানুষকে শিখাবো। এটাই আমার স্বপ্ন ছিলো যে নিজে পড়বো এবং অন্যকে পড়াবো।

প্রশ্ন : অনেকেই মনে করেন ছাত্রদের রাজনৈতিক বিষয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই, একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হিসেবে এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?
ছৈয়দ তানভীর হাসান জাহিন
ঈদগাঁও, কক্সবাজার
উত্তর : কথাটা ঠিক নয়, ছাত্রদেরও রাজনীতি করার অধিকার আছে। কিন্তু এ রাজনীতিটা হিংসাত্মক রাজনীতি না। এ রাজনীতি সৃজনমুখী বা কনস্টিটিউশনাল রাজনীতি হওয়া উচিত। আমরাও ছাত্ররাজনীতি করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কিংবা রাজশাহী কলেজে পড়ার সময় আমরাও রাজনীতিতে ছিলাম। কিন্তু হিংসাত্মক রাজনীতি যেটা, সেটা কোনো দিন করিনি।
এটাকে ঘৃণা করি। যেটা ক্রিয়েটিভ রাজনীতি তার অবশ্যই গ্রহণযোগ্যতা আছে। অর্থাৎ তোমার দাবি-দাওয়া তুলে ধরার মাধ্যম যদি রাজনীতি হয় তাহলে ভালো, আর যদি তা অকল্যাণকর হয় তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তা সবসময়ই ঘৃণ্য।

SHARE

Leave a Reply