নতুন কিশোরকণ্ঠের উদ্যোগে লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর সেগুন রেস্টুরেন্টে গত ৫ আগস্ট (১৬ রমজান) বিকেলে এই মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ। সভাপতিত্ব করেন সমকালীন বাংলা সাহিত্য তথা বর্তমান বাংলাদেশের প্রধান কবি আল মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী, কবি জুবাইদা গুলশান আরা, অধ্যাপক মুহম্মদ মতিউর রহমান, জয়নুল আবেদীন আজাদ, কিশোরকণ্ঠের সম্পাদক কবি মোশাররফ হোসেন খান, কবি আসাদ বিন হাফিজ, কবি ফারুক নওয়াজ, গবেষক আশরাফুল ইসলাম ও কবি জাকির আবু জাফর প্রমুখ।
প্রধান অতিথি বলেন, মনকে পবিত্র করার জন্য নিজেদের পবিত্র কুরআনের দিকে নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি বিজ্ঞান-প্রযুক্তির গবেষণায় নিজেদের নিবেদিত করতে হবে। তাহলেই মুসলিম সমাজ আবারো নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হতে পারবে। তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্বের কাছে বিশ্বের ৮০ ভাগ সম্পদ থাকলেও মুসলিম দেশগুলো দারিদ্র্যপীড়িত। বিশ্বে ৫৭টি মুসলিম রাষ্ট্র, বেশির ভাগ রাষ্ট্রেই জনগণ যথাযথ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। অথচ ১৩ শতকে মুসলিম সমাজ ছিল সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত। আজকের কিশোর-তরুণরাই ব্যর্থতার গ্লানি মুছে দেশ ও সমাজকে সামনে এগিয়ে নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে কবি আল মাহমুদ বলেন, কিশোরকণ্ঠ যে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে তা আমাকে বিস্মিত করেছে। কিশোরকণ্ঠের যে ভিত্তি তৈরি হয়েছে তা অটুট থাকবে। ‘কিশোরকণ্ঠ’ শুনতে বয়স কম মনে হলেও আসলে এই পত্রিকা অনেক পরিণত। এ জন্য পত্রিকা সংশ্লিষ্টদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। সাহিত্য-সংস্কৃতি-শিল্পের ক্ষেত্রে যে আত্মত্যাগের প্রয়োজন কিশোরকণ্ঠ পরিবার তা দেখাতে পেরেছে। তিনি বলেন, কিশোরকণ্ঠ আমার আত্মার আত্মীয়। অসুস্থতার মাঝেও তাই তাদের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে পারি না। এখানে এলে আমি নিজেকে খুবই প্রফুল্ল মনে করি। কোত্থেকে যেন মনে বল ফিরে পাই। তিনি সামনের দিনে কিশোরকণ্ঠের বিজয় কামনা করেন।
কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, কিশোরকণ্ঠের এই অনন্য ইফতার আয়োজনে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। ইফতার মাহফিলে দেশের প্রথিতযশা কণ্ঠস্বরগুলোকে তথা কলমসৈনিকদেরকে একত্রে পেয়ে আমি সত্যিই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছি। রোজার মাসে এটি আমার অন্যরকম একটি আনন্দের দিন। কিশোরকণ্ঠ সামনের দিকে আরো এগিয়ে যাক। আমি এই পত্রিকার সাফল্য কামনা করি।
কথাশিল্পী জুবাইদা গুলশান আরা বলেন, কিশোরকণ্ঠ আমার আত্মার সাথে মিশে আছে। প্রতিবছর রমজান মাসে যখন তারা এমন সুন্দর একটি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে এবং আমাকে নিমন্ত্রণ করে, আমি না করতে পারি না। ছুটে আসি। মূলত ইফতার মাহফিল আর ইফতার মাহফিলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, হয়ে ওঠে নবীন-প্রবীণ লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের মিলনমেলা। রমজানের প্রকৃত শিক্ষা বাস্তবায়নে কিশোরকণ্ঠ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে বলে আমার বিশ্বাস।
ইফতার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী হামিদুল ইসলাম, কবি নাসির হেলাল, কিশোরকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক নিজামুল হক নাঈম, কবি মহিউদ্দিন আকবর, নাট্যকার শাহ আলম নূর, কবি নাহার আহমেদ, কিশোরকণ্ঠের সহকারী সম্পাদক গল্পকার জুবায়ের হুসাইন, আনিসুর রহমান, মশিউর রহমান রাজু, তোফাজ্জল হোসাইন, গল্পকার নাসিমুল বারী, ইব্রাহীম বাহারী, কবি মৃধা আলাউদ্দিন, কবি সিদ্দিক আবু বকর, কবি কামাল হোসাইন, কবি আবিদ আজম প্রমুখ।